দিপ্তি শার্মার ফুল টস অফ সাইডে ঠিকমতো খেলতে পারলেন না ন্যাডাইন ডি ক্লার্ক। এক্সট্রা কাভারে ক্যাচ মুঠোয় জমিয়ে ছুটলেন ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রিত কৌর। দলের অন্য ক্রিকেটাররাও ছুটলেন দিগি¦দিক। ডাগআউট থেকে মাঠে ছুটে এলেন অন্যরাও। চলতে থাকল উৎসব। বহুল প্রতীক্ষার পর অবশেষে এলো কাক্সিক্ষত মুহূর্ত, প্রথমবার উইমেন’স বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ভারত। রান তাড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক লরা উলভার্টের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি কাজে এলো না। নাভি মুম্বাইয়ে দর্শকে ঠাসা গতপরশু রাতের ফাইনালে ৫২ রানের জয়ে উইমেন’স ওয়ানডের নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হলো ভারত। ২৯৯ রানের লক্ষ্য তাড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা গুটিয়ে যায় ২৪৬ রানে। আগে দুটি ফাইনালে হারা ভারত তৃতীয়বারের চেষ্টায় পেল ট্রফির ছোঁয়া। এর আগে ২০০৫ ও ২০১৭ সালের আসরের ফাইনালে হেরেছিল তারা। প্রথমবার ফাইনালে উঠে স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় পুড়ল দক্ষিণ আফ্রিকা। গত দুই বছরে পরপর দুটি উইমেন’স টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালেও হেরেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। গত বছর পুরুষদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালেও দক্ষিণ আফ্রিকা হেরেছিল ভারতের বিপক্ষে। নারী বিশ্বকাপের ১৩তম আসরে এসে দেখা মিলল চতুর্থ চ্যাম্পিয়ন দলের। রেকর্ড সাতবার জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। চারবার জিতে তাদের ঠিক পরেই ইংল্যান্ডের অবস্থান। বাকিটি গেছে নিউজিল্যান্ডের ঝুলিতে।
ভারত নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন
মুম্বাইয়ের ড. ডিওয়াই পাতিল স্পোর্টস একাডেমিতে বৃষ্টির কারণে ম্যাচ শুরু হয় এদিন দুই ঘন্টা দেরিতে। পিচ কাভারে ঢাকা ছিল তিন ঘণ্টার বেশি সময় ধরে। তবে এর প্রভাব খুব একটা পড়েনি ভারত ব্যাটিংয়ে নামার পর। সপ্তাহখানেক আগেও বিশ্বকাপের ধারেকাছে ছিলেন না যিনি, সেই শেফালি ভার্মা দুর্দান্ত অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে ভারতের ফাইনাল জয়ের নায়ক। মূল স্কোয়াডে তো নয়ই, রিজার্ভ তালিকাতেও ছিল না তার নাম। প্রাতিকা রাওয়াল চোট পেয়ে ছিটকে গেলে বদলি হিসেবে সেমি-ফাইনালের আগে দলে ডাক পান শেফালি। ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলতে তখন তিনি ছিলেন সুরাটে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেমি-ফাইনালে ভালো করতে না পারলেও, ফাইনালে ব্যাটে-বলে ক্যারিয়ার সেরা পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে দলকে বিশ্ব জয়ের স্বাদ দিলেন তিনি।
ব্যাটিংয়ে ৭ চার ও ২ ছক্কায় ৭৮ বলে ৮৭ রান করেন শেফালি। ছেলে কিংবা মেয়েদের যে কোনো সংস্করণের বিশ্বকাপ ফাইনালে কোনো ভারতীয় ওপেনারের সর্বোচ্চ ইনিংস এটি। পরে অফ স্পিনে নেন গুরুত্বপূর্ণ দুটি উইকেট। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে আগে পাঁচ ইনিংসে বোলিং করে তার উইকেট ছিল একটি। এবার এক ম্যাচেই নিলেন দুটি। ফাইনাল-সেরার পুরস্কার ওঠে তার হাতেই। অবদান কোনো অংশে কম নয় দিপ্তিরও। ব্যাটিংয়ে ৩ চার ও এক ছক্কায় ৫৮ বলে ৫৮ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। এই অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার বোলিংয়ে ৩৯ রানে নেন ৫ উইকেট। ছেলে কিংবা মেয়েদের বিশ্বকাপের নকআউট ম্যাচে ব্যাটিংয়ে ফিফটি ও বোলিংয়ে পাঁচ উইকেট নেওয়া প্রথম ক্রিকেটার তিনিই। আসরের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার গেছে দীপ্তির ঝুলিতে।