গাজা উপত্যকা: ইসরায়েলি বাহিনীর কাছ থেকে ফেরত পাওয়া ফিলিস্তিনি বন্দিদের মৃতদেহে ‘নির্যাতন, দগ্ধ এবং হাত-পা বাঁধার স্পষ্ট চিহ্ন’ দেখা গেছে বলে জানিয়েছে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
জঘন্য বর্বরতা: পশুর মতো বাঁধা, দগ্ধ ও নির্যাতনের ক্ষতসহ ফিলিস্তিনিদের মরদেহ ফেরত দিল ইসরায়েল





বৃহস্পতিবার (তারিখ আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী বসিয়ে দিন) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ড. মুনির আল-বুরশ এই ঘটনাকে ‘পূর্ণমাত্রার যুদ্ধাপরাধ’ আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।
বন্দি প্রত্যর্পণ এবং ভয়াবহ চিহ্ন
ড. বুরশ মানবজমিনকে বলেন, “গাজার বন্দিদের মরদেহ আমাদের কাছে পশুর মতো বাঁধা অবস্থায় এসেছে। তাদের চোখ বাঁধা ছিল, এবং দেহে দগ্ধ ও নির্যাতনের ভয়াবহ চিহ্ন রয়েছে—যা গোপনে সংঘটিত বর্বরতার প্রমাণ।”
তিনি আরও বলেন, “এই সব দেহে থাকা ক্ষত চিহ্ন এমন অপরাধের সাক্ষ্য দেয়, যা লুকানো সম্ভব নয়। অনেক বন্দিকে বেঁধে রাখার পর সরাসরি গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রমাণ মিলেছে।” তিনি দৃঢ়তার সাথে যোগ করেন, নিরীহ ফিলিস্তিনিদের এই মরদেহগুলো মৃত্যুর পরও তাদের হত্যাকারীদের নৃশংসতার সাক্ষী হয়ে রইল।
অঙ্গ চুরির আশঙ্কা ও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন
এদিকে, ফিলিস্তিনি বন্দিবিষয়ক গণমাধ্যম কার্যালয় (Palestinian Prisoners’ Media Office) একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, ফেরত পাওয়া কিছু মরদেহে মানব অঙ্গ চুরির প্রমাণও থাকতে পারে। সংস্থাটি এটিকে ‘মানবতার সীমা ছাড়ানো এক অপরাধ’ এবং দখলদার বাহিনীর চলমান পরিকল্পিত অপরাধেরই ধারাবাহিকতা বলে উল্লেখ করেছে।
চিকিৎসক ও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের উদ্ধৃতি দিয়ে সংস্থাটি আরও জানায়, "ফেরত পাওয়া বহু মরদেহ হাতকড়া পরা, চোখ বাঁধা অবস্থায় ছিল; শরীরে ছিল তীব্র নির্যাতন, দগ্ধতা ও সাঁজোয়া যান দিয়ে পিষে ফেলার মতো ক্ষতের চিহ্ন।"
বিবৃতিতে স্পষ্টভাবে বলা হয়, এই প্রমাণগুলো ইঙ্গিত করে যে, অনেক বন্দীকে গ্রেফতারের পর ঠান্ডা মাথায় হত্যা করা হয়েছে—যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও চতুর্থ জেনেভা কনভেনশনের সরাসরি লঙ্ঘন। সংস্থাটি অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
ফেরত আসা মরদেহের সংখ্যা
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে যে তারা আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটির মাধ্যমে ইসরায়েলের কাছ থেকে প্রথমে ৩০ ফিলিস্তিনির মরদেহ গ্রহণ করে, যাদের অনেকের শরীরে ‘নির্যাতন ও পোড়ার চিহ্ন’ ছিল। যুদ্ধবিরতির পর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েল মোট ১২০ ফিলিস্তিনির মৃতদেহ ফেরত দিয়েছে বলে মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে।