পাকিস্তানের হামলায় তিন ক্রিকেটারসহ বেশ কজনের মৃত্যুতে গভীর শোক ও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন আফগানিস্তানের তারকা ক্রিকেটাররা। হামলার প্রতিবাদে পাকিস্তানে ত্রিদেশীয় সিরিজ থেকে আফগানিস্তানের নাম প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক রাশিদ খান।
পাকিস্তানে রক্ত ঝরল ক্রিকেটারের: শোকের ছায়া আফগান ক্রিকেটে, সরব রশিদ-নবি





আফগানিস্তানের উর্গুন জেলায় পাকিস্তানের হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছে বলে জানায় আফগানিস্তানের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। তাদের মধ্যে আছেন তিনজন স্থানীয় ক্রিকেটার, যারা পাক্তিকা প্রদেশের রাজধানী শারানায় একটি প্রীতি ম্যাচ খেলে বাড়ি ফিরছিলেন।
বেশ কিছুদিন ধরেই দুই দেশের সীমানা উত্তেজনা ও হামলার ঘটনা চলছে। সেটিকেই নতুন মোড়ে পৌঁছে দিয়েছে এই হামলা ও উঠতি ক্রিকেটারদের মৃত্যু।
সামাজিক মাধ্যমে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আফগানিস্তানের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট তারকা রাশিদ খান।
“আফগানিস্তানে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক বিমান হামলায় বেসামরিক মানুষদের মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। মর্মান্তিক এই ঘটনা নিয়েছে নারী, শিশু ও উঠতি ক্রিকেটারদের প্রাণ, যারা বিশ্বমঞ্চে আফগানিস্তানকে প্রতিনিধিত্ব করার স্বপ্ন দেখছিল।”
“বেসামরিক অবকাঠামোকে লক্ষবস্তু বানানো পুরোপুরি অনৈতিক ও বর্বরোচিত। এই ধরনের অন্যায় ও বেআইনী কাজ মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন এবং কোনোভাবেই অলক্ষিত থাকতে পারে না।”
পাকিস্তানের এই হামলার প্রতিবাদে এর মধ্যেই আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড জানিয়েছে, আগামী মাসে পাকিস্তানে ত্রিদেশীয় সিরিজে খেলবে না তারা।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাকিয়ে পাকিস্তান-আফগানিস্তানের সঙ্গে শ্রীলঙ্কাকে নিয়ে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজটি হওয়ার কথা আগামী ১৭-২৯ নভেম্বর রাওয়ালপিন্ডি ও লাহোরে।
বোর্ডের এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে পুরোপুরি একমত টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক রাশিদ।
“নির্দোষ মানুষগুলোর প্রাণ হারানোর প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে সূচি থেকে সরে দাঁড়ানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বোর্ড, আমি সেটিকে স্বাগত জানাই। এই কঠিন সময়ে দেশের মানুষের পাশে আছি আমি, অন্য যে কোনো কিছুর ওপরে জায়গা দিতে হবে আমাদের জাতীয় মর্যাদাকে।”
আফগান ক্রিকেটের আরেক বড় রতার মোহাম্মাদ নাবি সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, গোটা জাতির জন্যই বড় আঘাত এই হামলা।
“পাক্তিকার উর্গুন জেলায় বীর ক্রিকেটারদের প্রাণ হারানোর ঘটনা খুবই বেদনাদায়ক, একটি প্রীতি ম্যাচের পর যাদের ওপর হামলা চালিয়েছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। এই ঘটনা শুধু পাক্তিকার জন্যই নয়, পুরো আফগান ক্রিকেট পরিবার তথা জাতির জন্যও বড় আঘাত। নির্দোষ ওই ক্রিকেটারদের পরিবার, স্বজন ও পাক্তিকার মানুষদের প্রতি আমার গভীর সমবেদনা।”
একই সুর অলরাউন্ড গুলবাদিন নাইবের কণ্ঠেও।
“পাক্তিকার উর্গুনে কাপুরুষোচিত সামরিক হামলায় আমরা গভীরভাবে শোকাহত, যেখানে শহীদ হয়েছে বেসামরিক লোকজন ও আমাদের সতীর্থ ক্রিকেটাররা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর এই নৃশংস আচরণ আমাদের দেশের মানুষ, দেশের গর্ব ও স্বাধীনতার ওপর তীব্র আঘাত। তবে আফগান চেতনাকে ভাঙতে পারবে না এসব।”
বাঁহাতি পেসার ফাজালহাক ফারুকির চোখে, পাকিস্তানের এই হামলা ক্ষমা করার মতো নয়।
“নিদোর্ষ বেসামরিক লোকজন ও আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটারদের যেভাবে হত্যা করেছে নিপীড়করা, তা অত্যস্ত জঘন্য ও ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। সর্বশক্তিমান আল্লাহ যেন শহীদদেরকে বেহেশতের সর্বোচ্চ স্থানে জায়গা করে দেন এবং দোষীদের উপযুক্ত সাজা দেন। বেসামরিক লোক ও ক্রিকেটারদের হত্যা করায় গর্বের কিছু নেই, টো বরং গভীরতম অসম্মান। আফগানিস্তান দীর্ঘজীবী হোক।”