দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিল কমনওয়েলথভুক্ত তিন দেশ - ব্রিটেন, কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়া।তবে এই স্বীকৃতিকে কোনোভাবেই হামাসের প্রতি সমর্থন হিসেবে দেখছে না দেশগুলো। বরং তারা স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে, এই পদক্ষেপ ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের নেতৃত্বে একটি রাষ্ট্র গঠনে সহায়তা করবে এবং হামাসকে ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা কাঠামো থেকে সম্পূর্ণভাবে বাদ দেবে।
ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিল ব্রিটেন, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া





দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিল কমনওয়েলথভুক্ত তিন দেশ - ব্রিটেন, কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়া। সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) দেশগুলো একযোগে এই ঘোষণা দেয়। এই তিন দেশের মধ্যে ব্রিটেন ও কানাডা জি-৭ জোটের সদস্য হওয়ায় এটি একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কারণ এই প্রথম জি-৭-এর কোনো সদস্য দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিল।
এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ১৯১৭ সালের বিতর্কিত বেলফোর ঘোষণার মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতের জন্ম দেওয়া ব্রিটেনের অবস্থান পরিবর্তনের বিষয়টি সামনে এসেছে। এতে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে 'দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান' আবারও গতি পেতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
তবে এই স্বীকৃতিকে কোনোভাবেই হামাসের প্রতি সমর্থন হিসেবে দেখছে না দেশগুলো। বরং তারা স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে, এই পদক্ষেপ ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের নেতৃত্বে একটি রাষ্ট্র গঠনে সহায়তা করবে এবং হামাসকে ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা কাঠামো থেকে সম্পূর্ণভাবে বাদ দেবে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি এক বিবৃতিতে বলেছেন, "কানাডা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের নেতৃত্বে একটি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিচ্ছে।" তিনি আরও বলেন, "এটি ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জন্য আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার অংশ এবং যারা হামাসের অবসানের চেষ্টা করছে, তাদের জন্য এটি একটি শক্তিশালী সমর্থন। এটি কোনোভাবেই সন্ত্রাসবাদের ন্যায্যতা বা পুরস্কার নয়।"
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজও প্রায় একই ধরনের বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, "গাজার যুদ্ধ বন্ধ এবং দীর্ঘমেয়াদী শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য ফিলিস্তিনি স্বাধীনতা অপরিহার্য।" তিনি আরও বলেন, "একটি নতুন রাষ্ট্রের রাজনৈতিক বা নিরাপত্তা কাঠামোতে হামাসের কোনো ভূমিকা থাকতে পারে না।"
কানাডার ঘোষণার প্রায় সাত ঘণ্টা পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার একটি ভিডিও বার্তায় বলেন, "শান্তি এবং 'দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান' এর আশাকে পুনরুজ্জীবিত করতে, ব্রিটেন ফিলিস্তিনকে একটি রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছে।" তিনি স্পষ্ট করে বলেন, "এই পদক্ষেপ হামাসের জন্য কোনো পুরস্কার নয়, বরং এর মাধ্যমে ভবিষ্যতে তাদের সম্পূর্ণ বর্জনের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।" তিনি আরও জানান যে, তিনি তার মন্ত্রিসভাকে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে হামাসের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত নিষেধাজ্ঞা প্রস্তুত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে, ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করে বলেছে, "এটি কার্যকরভাবে সন্ত্রাসবাদকে পুরস্কৃত করার শামিল।" তা সত্ত্বেও, ব্রিটেন, কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়ার এই স্বীকৃতি মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রক্রিয়াকে নতুন দিকে চালিত করতে পারে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।