যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও ইউরোপের যৌথ চাপের মুখে পরমাণু কর্মসূচি জোরদারের ঘোষণা পেজেশকিয়ানের
পশ্চিমের সঙ্গে ‘পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে’ ইরান: ইরাক যুদ্ধের চেয়েও ভয়াবহ পরিস্থিতির হুঁশিয়ারি
বিশ্ব রাজনীতির উত্তপ্ত পরিস্থিতির মাঝেই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। তিনি দাবি করেছেন, ইরান বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও ইউরোপীয় শক্তিগুলোর সঙ্গে একটি ‘পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধাবস্থায়’ রয়েছে। পশ্চিমা বিশ্বের ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা ও সামরিক চাপের মুখেও তেহরান তার পারমাণবিক সক্ষমতা পুনর্গঠনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।
শনিবার দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান এই কঠোর অবস্থান ব্যক্ত করেন। তাঁর এই বক্তব্য আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
আশির দশকের চেয়েও জটিল সংকট
পেজেশকিয়ান ১৯৮০-৮৮ সালের ইরান-ইরাক যুদ্ধের স্মৃতিচারণ করে বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি সেই সময়ের চেয়েও কয়েক গুণ বেশি ভয়াবহ ও জটিল। তিনি বলেন, "ইরাকের সঙ্গে যুদ্ধের সময় লক্ষ্যবস্তু ও শত্রু স্পষ্ট ছিল। তারা মিসাইল ছুড়লে আমরা জানতাম কোথায় পাল্টা জবাব দিতে হবে। কিন্তু এখন আমরা আক্ষরিক অর্থেই চারদিক থেকে ঘেরাও হয়ে আছি। তারা চায় না আমাদের দেশ স্থিতিশীল থাকুক।"
ট্রাম্প-নেতানিয়াহু বৈঠকের আগে কড়া বার্তা
আগামী সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সেই বৈঠকের মূল আলোচ্য বিষয় হবে ইরান। ঠিক তার আগেই পেজেশকিয়ানের এই মন্তব্যকে পশ্চিমা বিশ্বের প্রতি তেহরানের একটি আগাম হুঁশিয়ারি হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
মার্কিন হামলার প্রভাব ও ইরানের শক্তি প্রদর্শন
চলতি বছরের জুন মাসে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের আকস্মিক হামলার প্রসঙ্গ টেনে পেজেশকিয়ান বলেন, সেই হামলার প্রভাব ছিল নগণ্য। তিনি দাবি করেন, ইরানের সামরিক বাহিনী বর্তমানে সরঞ্জাম ও জনশক্তির দিক থেকে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। তাঁর ভাষ্যমতে, "আমাদের প্রিয় সামরিক বাহিনী সাহসের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে। যদি তারা আবারও আক্রমণের দুঃসাহস দেখায়, তবে এবার আরও ভয়াবহ ও কঠোর জবাবের মুখোমুখি হতে হবে।"
পরমাণু কর্মসূচি ও আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা
ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের প্রচেষ্টার অভিযোগ তুলে সম্প্রতি জাতিসংঘ দেশটির ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তবে ইরানের প্রেসিডেন্টের দাবি, কোনো চাপ বা নিষেধাজ্ঞাই তাদের কৌশলগত সক্ষমতা বৃদ্ধি থেকে বিরত রাখতে পারবে না।