নতুন কারখানা নির্মাণ ও ‘গোপন পানির নিচে অস্ত্র’ তৈরির নির্দেশ উত্তর কোরিয়া প্রধানের
২০২৬-এ সমরাস্ত্রের পাহাড় গড়বেন কিম: ক্ষেপণাস্ত্র ও সাবমেরিন প্রকল্পে বড় ঘোষণা
নতুন বছর ২০২৬-কে সামনে রেখে নিজের সামরিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা আরও বাড়িয়ে দিলেন উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উন। দেশটির প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে আধুনিকায়নের কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে নতুন নতুন অস্ত্র কারখানা নির্মাণের মহাপরিকল্পনাও ঘোষণা করেছেন এই নেতা।
কারখানা পরিদর্শনে কিমের বিশেষ বার্তা
শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ (KCNA) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, কিম জং উন সম্প্রতি দেশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে বেশ কয়েকটি বড় সমরাস্ত্র কারখানা পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে তিনি স্পষ্ট জানান যে, সশস্ত্র বাহিনীর প্রয়োজন মেটাতে উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোর বিকল্প নেই। যুদ্ধের কার্যকর প্রতিরোধের জন্য ক্ষেপণাস্ত্র এবং গোলার যোগান বাড়ানোকে তিনি ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে অভিহিত করেন।
লক্ষ্য যখন যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া
বিশেষজ্ঞদের মতে, কিমের এই তৎপরতার পেছনে প্রধানত তিনটি লক্ষ্য কাজ করছে—ক্ষেপণাস্ত্রের নিখুঁত আঘাত হানার ক্ষমতা বাড়ানো, যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য কৌশলগত চ্যালেঞ্জ তৈরি করা এবং আন্তর্জাতিক বাজারে সমরাস্ত্র রপ্তানির আগে বড় পরিসরে পরীক্ষা চালানো। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উত্তর কোরিয়া তাদের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার হার বাড়িয়ে দিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
সাবমেরিন ও ‘গোপন অস্ত্র’ নিয়ে উদ্বেগ
অস্ত্র কারখানা পরিদর্শনের পাশাপাশি কিম একটি পারমাণবিক সাবমেরিন নির্মাণের সুবিধাসমূহও ঘুরে দেখেন। এ সময় তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার পারমাণবিক সাবমেরিন তৈরির উদ্যোগকে ‘সরাসরি হুমকি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং তা মোকাবিলার অঙ্গীকার করেন। একই সঙ্গে তিনি ‘পানির নিচের নতুন ধরনের গোপন অস্ত্র’ নিয়ে গবেষণার তথ্য দিয়ে সিউল ও ওয়াশিংটনের প্রতি নতুন হুঁশিয়ারি সংকেত পাঠিয়েছেন।
২০২৬-এর কংগ্রেস ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
আগামী ২০২৬ সালের শুরুতে দীর্ঘ পাঁচ বছর পর উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির প্রথম কংগ্রেস আয়োজিত হতে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, ওই কংগ্রেসেই আগামী পাঁচ বছরের অর্থনৈতিক ও সামরিক উন্নয়নের চূড়ান্ত রূপরেখা ঘোষণা করা হবে। এর আগে জাপান সাগরে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন দূরপাল্লার আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা তদারকি করে নিজের শক্তির জানান দিয়েছেন কিম।