মৃদু শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত জনজীবন; হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা
চুয়াডাঙ্গায় কাঁপন ধরানো শীত: মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯.৬ ডিগ্রি
পৌষের মাঝামাঝি সময়ে এসে হাড়কাঁপানো শীতে স্থবির হয়ে পড়েছে চুয়াডাঙ্গার স্বাভাবিক জনজীবন। উত্তরীয় হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে পথঘাট ও ফসলের মাঠ। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) জেলায় চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা এই অঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগকে কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
শৈত্যপ্রবাহের কবলে জেলা
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, আজ শুক্রবার সকাল ৯টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৫ শতাংশ। আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে বর্তমানে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। হিমেল বাতাসের কারণে প্রকৃত তাপমাত্রার চেয়েও বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে।
থমকে গেছে দৈনন্দিন জীবন
ঘন কুয়াশার কারণে দুপুর গড়িয়ে গেলেও অনেক সময় সূর্যের দেখা মিলছে না। ফলে ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল; সড়ক ও মহাসড়কে যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলতে দেখা গেছে। কনকনে ঠান্ডার কারণে ভোরে মানুষের উপস্থিতি একদম কমে গেছে।
সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। দিনমজুর, ভ্যানচালক ও কৃষি শ্রমিকরা তীব্র শীতের কারণে কাজে বের হতে পারছেন না। রাস্তার পাশে থাকা ছিন্নমূল মানুষকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের আপ্রাণ চেষ্টা করতে দেখা গেছে। হাড়কাঁপানো এই ঠান্ডা থেকে বাঁচতে শহরের পুরনো কাপড়ের দোকানগুলোতে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
স্বাস্থ্যঝুঁকিতে শিশু ও বৃদ্ধরা
শীতের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে জেলা সদরসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। চিকিৎসকরা এই সময়ে শিশু ও বৃদ্ধদের বাড়তি যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।
সাহায্যের আহ্বান
তীব্র এই শীত ও শৈত্যপ্রবাহের হাত থেকে শীতার্ত ও অসহায় মানুষকে রক্ষা করতে জেলা প্রশাসন এবং সমাজের বিত্তবানদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল।