তাইওয়ান ইস্যুতে ফুঁসছে বেইজিং: ২০ মার্কিন প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওপর চীনের নিষেধাজ্ঞা

Total Views : 42
Zoom In Zoom Out Read Later Print

অস্ত্র বিক্রির জেরে বোয়িং ও নর্থরপ গ্রুম্যানসহ ১০ কর্মকর্তার সম্পদ জব্দের নির্দেশ

তাইওয়ানের কাছে বিপুল পরিমাণ সমরাস্ত্র বিক্রির প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে চীন। ওয়াশিংটনের ২০টি শীর্ষস্থানীয় প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ১০ জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বেইজিং। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাতে জানা গেছে, তাইওয়ানকে সামরিক সহায়তা দেওয়ার প্রতিবাদে বেইজিং এই পদক্ষেপ নিয়েছে।

নিষেধাজ্ঞার আওতায় যারা

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকা অনুযায়ী, নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে বোয়িংয়ের সেন্ট লুইস প্রতিরক্ষা শাখা, নর্থরপ গ্রুম্যান সিস্টেমস কর্পোরেশন এবং এল৩ হ্যারিস মেরিটাইম সার্ভিসেস। এছাড়া ১০ জন ব্যক্তির তালিকায় রয়েছেন অ্যান্ডুরিল ইন্ডাস্ট্রিজের প্রতিষ্ঠাতা এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষস্থানীয় নয়জন কর্মকর্তা।

বেইজিংয়ের কঠোর পদক্ষেপ

আরোপিত এই ব্যবস্থার ফলে:

  • নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত কোম্পানি ও ব্যক্তিদের চীনে থাকা সকল সম্পদ বাজেয়াপ্ত বা জব্দ করা হবে।

  • চীনের কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তাদের সঙ্গে কোনো ধরনের ব্যবসায়িক লেনদেন করতে পারবে না।

  • সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চীনের মূল ভূখণ্ডে প্রবেশাধিকার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

উত্তেজনার মূলে ১১.১ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি

সম্প্রতি তাইওয়ানের জন্য ১১.১ বিলিয়ন ডলারের একটি বিশাল অস্ত্র বিক্রির প্যাকেজ অনুমোদন করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যা এযাবৎকালের সর্ববৃহৎ সামরিক সহায়তা। বেইজিং এই পদক্ষেপকে তাদের জাতীয় সার্বভৌমত্বের ওপর বড় আঘাত হিসেবে দেখছে। চীন সরকারের মতে, তাইওয়ান ইস্যু তাদের মূল স্বার্থের কেন্দ্রবিন্দু এবং এটি এমন এক ‘লাল রেখা’ যা কোনোভাবেই অতিক্রম করা উচিত নয়। যুক্তরাষ্ট্রকে দ্বীপরাষ্ট্রটিকে সশস্ত্র করার এই ‘বিপজ্জনক’ খেলা বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছে বেইজিং।

যুক্তরাষ্ট্রের তীব্র প্রতিবাদ

চীনের এই নিষেধাজ্ঞার বিপরীতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, তাইওয়ানের আত্মরক্ষা সক্ষমতাকে শক্তিশালী করতে মার্কিন অস্ত্র সরবরাহ দীর্ঘদিনের প্রতিষ্ঠিত নীতি। চীনের এই প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপকে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে। মার্কিন কর্মকর্তাদের মতে, এই নীতি গত নয়টি প্রশাসনের সময় যেমন ছিল, তেমনই আছে এবং এটি তাইওয়ান প্রণালিতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়ক।

সংঘাত নাকি প্রতীকী ব্যবস্থা?

বিশ্লেষকদের মতে, চীনের এই নিষেধাজ্ঞা মূলত একটি প্রতীকী বার্তা। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রতিরক্ষা কোম্পানিগুলোর সঙ্গে চীনের সরাসরি ব্যবসায়িক সম্পর্ক খুবই নগণ্য। তবে বোয়িংয়ের বেসামরিক বিমান শাখার জন্য চীন একটি বড় বাজার হওয়ায় এই উত্তেজনার প্রভাব সুদূরপ্রসারী হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

See More

Latest Photos